Powered By Blogger

My Blog List

Popular Posts

স্বাগতম

আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি

Total Pageviews

Pages

Tuesday, April 5, 2011

ফকির ইলিয়াস এর একগুচ্ছ কবিতা




ফকির ইলিয়াস এর একগুচ্ছ কবিতা









প্রত্যক্ষ সম্বন্ধ ও দুর্ভিক্ষবিষয়ক সেমিনার

----------------------------------------------
নীতি নির্ধারণী বৈঠকের বনভোজনে আমরা আমন্ত্রিত হয়েছি
এই দ্বিতীয়বার। ‘গ্রীনহর্স’­ ব্র্যান্ডের সাথে আমাদের প্রত্যক্ষ
সম্বন্ধ বেড়ে উঠেছে এভাবেই। যেভাবে পাঁজরবিহীন কোনো
সূর্যাহত কৃষক সন্তান বেড়ে উঠে সমান্তরাল। কাল-আকালের
বৃষ্টিছন্দ মাড়িয়ে। তারপর মাটির প্রচ্ছদে আঁকে নিজের ছবি।
কবি হলে লিখতে পারতো বিরহের কবিতা।
মঙ্গার মাদুর জড়ানো জীবনের জলকলা। বন্দনার দগ্ধ বিধুরতা।
ছাদহীন, চাঁদহীন শৈশবের পথধরে গড়ে উঠা প্রথার বিরুদ্ধে প্রথা।

সরল সলতেকথা
----------------------
আনন্দের উত্থান দেখি ঢেউয়ের মননে। চিনে রাখি এইসব
লঘু রোদের ঋতি। ইতি টেনে এসেছি সকল মৌন বৈভবের।
কালের কলতানে হারিয়ে গেছে যে গান, তারও স্বরলিপি খুঁজে
বাজাই এস্রাজ। সাজ , সম্ভাষণ সব ভুলে সমবেত হই সকালের
অমোঘ শয্যায়। প্রায় প্রতিভোরে যে পাখি পালক ফেলে যায় ,
আমি করি তারও সন্ধান। প্রাণের আগুনে জ্বালাই সলতের সুতো।
দ্রুত চলে যাই মেঘনার বিমুগ্ধ মোহনায়।দেখি আহত পাখিটি উড়ে যায় ..


ধানী জমির ধ্যানে মগ্ন যে জীবনের গান
...............................................................................

তোমার প্রিয় তালিকায় আমার নাম নেই , তা আমি দেখেছি। কিংবা তোমার লিংক সাম্রাজ্যে নেই আমার নীড়ছবি। তাও অজানা নয় আমার। মেরু বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠক সেরে ষ্টকহোম থেকে ফেরার পথে ওর সাথে নিবিড় দেখা হয়েছিল আমার। বলেছিলো, বোষ্টনে যাচ্ছি। ঘুরতে। বলেছিলাম, ফেরার পথে নিউইয়র্কের মিউজিয়াম অব ন্যাশনাল হেরিটেজ দেখে যাবার আমন্ত্রণ রইলো।

এর ঠিক তিনদিন পর বেজে ওঠে ফোন। সেই পরিচিত কন্ঠ। সময় হবে ? প্রশ্ন শোনে সেরে নিই প্রস্তুতি পর্ব। তারপর দেখা হয়ে যায়। আবারও শোনাই পাল তোলা নৌকোর গল্প। ধানী জমির ধ্যানে মগ্ন জীবনের গান। ও আমার গল্প শোনে তন্ময় হয়ে।

মানুষকে এভাবেই তন্ময় হয়ে যেতে হয়।আর পুঁজিতে জমা রাখতে হয় সমুদ্রের ফেনা।এই পৃথিবী আবার ফিরবে কালের জোয়ারে, সেরে নিতে সব লেনাদেনা।


তবে কী গৃহীত হবো না-------------------------------
দুপুরের দরোজা খুলতেই দেখি, আমার বুকের
ভেতরে ঢুকে পড়ছে একটুকরো মেঘ। জমাট সূর্য
তার অসমাপ্ত সত্ত্ব নিয়ে লিখাচ্ছে নাম ঘাসের পাঁজরে,
আর বুড়ো নদী তার প্রাগৈতিহাসিক তারুণ্য ধারণ
করে জানাচ্ছে প্রণাম জলকে , জলাশয়কে।

পকেটে কলমের কংকাল দেখে আমিও স্মরণ করতে
চাইছি আমার পুরো নাম। ঠিকানার প্রাচীন ইতিহাস।
এর আগে ছিলাম কোথায়, ইত্যাদি সময়ের রূপরেখা।
আর ভাবছি যে ইট একদিন নিজে পোড়ে , স্তরে স্তরে
সাজিয়েছিল দালান – সেই ইমারতের আলোয় যে
মানব- মানবী দাঁড়িয়ে আজ করছে প্রেমালাপ, তাদের
পূর্বসূরিরা কী তাকিয়েছিল পশ্চিম আকাশে – ভেসে যাওয়া
মেঘ দেখার সবুজ অপেক্ষায় !
অথবা এটাও ভাবছি বলা যায়, যে হেমন্ত মাঠের আঙিনায়
একটি দোয়েল ছায়া খুঁজে করছে বিলাপ
তার মতোই , আমিও কী এই মাঠালয়ে আরেকজন বন্দী
হিসেবে কখনওই গৃহীত হবো না !

1 comment:

saif Mohseen said...

আপনার কবিতায় একটা নিজস্বতা আছে । খুবই ধ্যানী কবিতা।