Powered By Blogger

My Blog List

Popular Posts

স্বাগতম

আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি

Total Pageviews

Pages

Saturday, March 8, 2008

বিবর্তন, বৈষম্য ও সৃজনশীলতার পূর্বশর্ত


বিবর্তন, বৈষম্য ও সৃজনশীলতার পূর্বশর্ত

ফকির ইলিয়াস

=================================

রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থা প্রাচ্য কিংবা পাশ্চাত্যের সব দেশেই আছে। একটি সমাজ নির্মাণে সে সমাজের মানুষের পরিশুদ্ধ অংশগ্রহণই নিশ্চিত করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর দিন। আর সে অংশগ্রহণ কিন্তু নারী এবং পুরুষের সমান ভাবেই হতে হয়। এমন এক সময় ছিল, যখন নারীশিশু জন্ম নিলে তাকে জীবন্ত পুঁতে রাখার আদিমতা ছিল সামজে। অথচ মানুষ সে সময়ও ছিল বিবর্তনবাদী। প্রশ্ন হচ্ছে মানুষ যদি সভ্যতা সুন্দর এবং সত্যের স্বপক্ষে বিবর্তনবাদীই হবে, তবে মাঝেমাঝে এখনো আদিমতা গ্রহণ করবে কেন?আমরা কতগুলো উদাহরণ দেখি এখনো প্রাচ্যের সমাজে। পুরুষতান্ত্রিক শক্তির ব্যবহার কখনো কখনো আমাদের ভুলিয়ে দেয়, এ সমাজে নারী নামের আরেকটি লিঙ্গের মানুষ আছে। শাসনের বিভিন্ন জাঁতাকলে আছে। এগুলোর মধ্যে রাষ্ট্রীয়, তত্ত্বীয়, ধর্মীয় এবং সামাজিক শাসনগুলোই প্রধান। আমরা দেখব যারা ফতোয়া দিয়ে বেড়ান, তারা কিন্তু ফতোয়াগুলোর নিরানব্বই ভাগই জারি করেন নারীদের বিরুদ্ধে। পুরুষের বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করে তাকে বড়জোর একঘরে করে রাখা যায় কয়েকমাস। তারপর সে আবার সমাজে উঠে আসে। কোনো পুরুষকে দোররা মারার ঘটনা আমরা কখনো শুনিনি। অথচ নারীকে দোররা মেরে মাটিতে পুঁতে হত্যা করার মর্মান্তিক ঘটনাও আমরা দেখেছি। ধর্ম এবং সমাজের মিশ্রণে এই যে পেশিশক্তির দাপট তা একটি শুদ্ধ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নির্মাণে হুমকি বৈকি!যেসব নারী গণিকাবৃত্তি করে তাদের সমাজ পতিতা বলে আখ্যায়িত করে খুব সহজে। প্রাচ্যে এবং পাশ্চাত্যে এই আখ্যায়ন চলছে এখনো। কিন্তু যে পুরুষ গণিকালয়ে যায় তাকে ‘পতিত বলে’ সমাজ আখ্যা দেয় না। দিতে পারে না। কেন পারে না? এতে বাধা কোথায়?আজ থেকে তিন দশক আগেও মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর নারীদের কর্মসংস্থান বিষয়ে নানা অলিখিত নিষেধাজ্ঞা ছিল। তা এখন ক্রমশ সরতে শুরু করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের সরকারি দফতর, ব্যাংক বীমা, হাসপাতাল, ডাকঘরসহ অনেক সরকারি বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠানে এখন নারীদের কর্মসংস্থানের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। আর তা সম্ভব হয়েছে সামাজিক ধ্যানি-চেতনার কারণেই। সামাজিক লিঙ্গ বৈষম্যের বিভিন্ন ধাপ আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লক্ষ্য করি। ইসলাম ধর্মে এক ছেলে সন্তানের সমান পরিমাণ মালামাল দু’মেয়ে সন্তান পাবে এমন একটি রেওয়াজ ছিল। তা বিভিন্ন দেশে এখন সংস্কার করা হয়েছে। একটি মেয়ের যদি একটি ভোট হয়, একটি ছেলেরও তেমনি একটি ভোট। তাহলে রাষ্ট্রে পৈতৃক মালামাল, সম্পত্তি পেতে বৈষম্য হবে কেন? বলা যায় বিয়ের প্রথার কথাও। একজন পুরুষ একসঙ্গে চারজন স্ত্রী রাখতে পারবে। কিন্তু একজন নারী একসঙ্গে একাধিক স্বামী রাখতে পারবে না। এই যে স্বীকৃত প্রথা ইসলাম ধর্মে রয়েছে, এর সহজ কোনো সমাধান আপাত দৃষ্টিতে নেই। যদি সামাজিকভাবে মানুষ তা গ্রহণ কিংবা বর্জনে রাজি না হয়।দুই. বিতর্কিত অনেক প্রথা অনেক ধর্মেই আছে। হিন্দু ধর্মে সতীদাহ, অকাল বৈধব্যের পর আর বিয়ে না করা প্রভৃতি কার্যক্রম কোনো সভ্য সমাজেই গৃহীত হতে পারে না। যারা কট্টরপন্থী জুইশ (ইহুদি) ধর্মাবলম্বী, সে সমাজের নারীদের বিয়ের পরই তাদের চুল কেটে ফেলতে হয়। তারপর তাদের পরচুলা ব্যবহার করতে হয়। স্বামীর মনোরঞ্জন ছাড়া অন্য কোনো পুরুষের যাতে দৃষ্টি কাড়তে না পারে সেজন্য হাইহিল জুতা, টাইট ফিটিংস কাপড়চোপড় তারা পরতে পারে না। এমনকি প্রচলিত আছে, জুইশ ধর্মাবলম্বী কট্টরপন্থী পুরুষরা তাদের স্ত্রীকে সন্তান ধারণে বাধ্য করে অনেকটা বলপূর্বক। অনেকটা ইচ্ছার বিরুদ্ধেই।ইউরোপ-আমেরিকার জুইশ ধর্মাবলম্বী কট্টরপন্থীরা তাদের ছেলেমেয়েদের বিয়ে শাদীর ব্যাপারেও পরিবারের অগ্রজদের মতামতকে চাপিয়ে দেয়। অ্যারেঞ্জড কিংবা সেটেলম্যারেজ প্রথা শুধু বাঙালি সমাজ ব্যবস্থায় নয়, আইরিশ, ইতালিয়ান, গ্রিক, জুইশ, রাশিয়ান সমাজেও আমরা প্রত্যক্ষ করি। আর এসব সমাজের দাম্পত্য জীবনে শান্তি এবং অশান্তি দুটোই কিন্তু থেকে যাচ্ছে সমানভাবে। এসব দায় থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হচ্ছে সমঝোতাপূর্ণ জীবনযাপন। তা যে কোনো দেশে যে কোনো সমাজেই হোক।লিঙ্গের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার একমাত্র পূর্বশর্ত হচ্ছে আইনের শাসন। গেল কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের একটি ঘটনা এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে। এক দম্পতি ডিভোর্স চেয়ে পারিবারিক আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিল। এ সময়ে স্বামী স্টেট লটারিতে পাঁচ মিলিয়ন ডলার জিতে যায়। স্ত্রী আইনানুযায়ী তার অর্ধেক দাবি করে। স্বামী বলে আমরা ডিভোর্স ফাইল যেহেতু করেছি, তাই স্ত্রী অর্ধেক অর্থমূল্য পাবে না। কিন্তু আইনি মারপ্যাঁচে হেরে যায় স্বামী। মাননীয় আদালত রায় দেন যেহেতু ডিভোর্স প্রক্রিয়াটি এখনো সম্পন্ন হয়নি তাই স্ত্রী লটারির অর্ধেক অর্থমূল্যের ভাগীদার। একটি রাষ্ট্রে সুষ্ঠু আইনি বিচার এবং সততা থাকলেই সমঅধিকারের বিষয়টি পূর্ণতায় রূপ নেয়া সহজ হতে পারে।আবারও ধরা যাক বাংলাদেশের মহান মুক্তি সংগ্রামের কথা। এই স্বাধীনতা সংগ্রামে নারীদের যে স্বর্ণোজ্জ্বল অবদান, তা কি সরকারিভাবে ব্যাপক স্বীকৃত হয়েছে? না, হয়নি। এমনকি যারা বীরাঙ্গনা, যারা তাদের মহামূল্যবান সম্ভ্রম হারিয়ে ছিলেন আমাদের বিজয়ের জন্য তাদের কিন্তু প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থা যথার্থ সম্মান দেয়নি। কেন দেয়া হয়নি? কেন এই দীনতা!ব্যক্তিস্বাধীনতা কিংবা আধুনিকতা মানুষের মৌলিক অধিকার। কিন্তু আধুনিকতার লেবাসে উগ্রতা, বেহিসেবীপনা কোনো সমাজই গ্রহণ করে না। যেসব কর্ম সমাজ কিংবা প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিতে পারে তাকে তো আর ব্যক্তিস্বাধীনতা বলা যায় না। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ইউরোপের কিছু কিছু দেশে যৌন উগ্রতার নামে মানব সভ্যতাকে ধ্বংসের কর্মকা- পরিচালনা করা হচ্ছে। যেমন অবৈধ মাদক দ্রব্যের বিক্রি লাইসেন্স নিয়ে ইউরোপের কোনো কোনো দেশে আইনি দেনদরবার চলছে। মাদক দ্রব্য গোটা মানব জাতির জন্যই মারাত্মক ক্ষতিকর। সে নারী কিংবা পুরুষ হোক।সমান অধিকারকামী সমাজ প্রতিষ্ঠার অন্যতম শর্ত হচ্ছে একটি রাষ্ট্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, যা নারী-পুরুষের অধিকারের নিরাপত্তা, নিশ্চয়তা দেবে। মানুষ মানুষের হাতে নিগৃহীত হবে না। মানুষ মানুষের কাছে প্রতারিত হবে না। তারপরের শর্তটি হচ্ছে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা। মনে রাখতে হবে সৃজনশীল বিবর্তনই মানুষকে এ জন্য সাহায্য করেছে। এর পাশাপাশি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহনশীলতাই হতে পারে সমাজ নির্মাণের মূলমন্ত্র।

---*************-------------------দৈনিক ডেসটিনি।ঢাকা।৯মার্চ ২০০৮ রোববার প্রকাশিত

Tuesday, March 4, 2008

সুবিচার যখন প্রধান নাগরিক প্রত্যাশা


সুবিচার যখন প্রধান নাগরিক প্রত্যাশা

ফকির ইলিয়াস

================================

দুর্নীতির অভিযোগে ফেঁসে যেতে পারেন নিউইয়র্কের সাবেক পুলিশ কমিশনার বার্নার্ড কেরিক। তার বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। ইন্টারনাল রেভিন্যু সার্ভিস (আইআরএস) বলেছে, তার আয়ের সঙ্গে ট্যাক্স প্রদানের সঙ্গতি নেই। এসব অর্থ কী করে অবৈধভাবে অর্জন করা হয়েছে? এমন অনেক প্রশু এখন মুখে মুখে। যদি তিনি দোষী সাব্যস্ত হন তবে যাবজ্জীবন কারাভোগ করতে হতে পারে। ইউএস অ্যাটর্নি বলেছেন, তিনি পুলিশের চিফ ছিলেন। সেই ব্যক্তিই যদি এমন দুর্নীতিগ্রস্ত প্রমাণিত হন তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিই মানুষ বিশ্বাস হারাবে। বার্নার্ড কেরিক নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র জুলিয়ানির ঘনিষ্ঠ জন। নাইন-ইলেভেনের সময়ও তিনিই ছিলেন পুলিশ কমিশনার। পরবর্তী সময়ে অবসরে যাওয়ার পর হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়ের প্রধান অর্থাৎ সেত্রেক্রটারি অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি হিসেবেও কেরিকের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। সে সময়ই তার বিরুদ্ধে বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগ আসে। বার্নার্ড কেরিক তার নাম প্রত্যাখ্যান করে নেন। কিন্তু তদন্ত তার পিছু ছাড়েনি। সেসবের অংশ হিসেবেই এখন তিনি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পথে। মামলার রায়, আপিল শুনানি সবকিছুর আইনি প্রত্রিক্রয়া সমাপ্ত হলে রায় তার অনুকূলে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা আপাতত নেই।বার্নার্ড কেরিকের নাম বাদ পড়ার পরই মাইকেল শের্টফকে প্রেসিডেন্ট বুশ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির প্রধান হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। যিনি এখনো এই পদে বহাল আছেন। এদিকে কেরিকও একজন সুপরিচিত রিপাবলিকান ধনপতি। পুলিশের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পর নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু পুলিশ কমিশনার হিসেবে তিনি কি অবৈধভাবে আয় করেছেন? এসব প্রমাণের জন্যই সরকার পক্ষ এখন নেমেছে কোমর বেঁধে। এই যে আইনি প্রক্রিয়া তা সবার জন্যই সমান থাকা বাঞ্ছনীয়। এর আগে ইন্টারনাল রেভিন্যু সার্ভিসের প্রধান রক্ষক অ্যালেন হ্যাভেসির বিরুদ্ধেও এ রকম অভিযোগ এসেছিল। তিনি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। অপরাধ শাস্তিযোগ্য হওয়ায় তাকেও শাস্তি পেতে হচ্ছে। এই যে ঘটনাবলি তা শুনে কেউ কেউ হয়তো বলবেন, যুক্তরাষ্ট্রে তো দুর্নীতি আরো অনেক হচ্ছে। সব দুর্নীতির বিচার হচ্ছে কি? বিচার যে হচ্ছে না তা কিন্তু নয়। দু’চারজন রাঘববোয়ালকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর মাধ্যমে যু্ক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এই বিশ্বাস স্থাপনে সমর্থ হয়েছে যে, মানুষের আস্থা নিয়েই চলেছে স্বাধীন বিচার বিভাগ। বাংলাদেশেও সদ্য স্বাধীন বিচার বিভাগ যাত্রা শুরু করেছে। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এই যাত্রা শুরুকে স্বাগত জানাতেই হবে। প্রশ্ন আসতেই পারে, এরপর মানুষ সুবিচার কিংবা দ্রুত বিচার পাবে কি-না। কিংবা মানুষের পক্ষে ন্যায়বিচার সুপ্রতিষ্ঠিত হবে কি-না। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সঙ্গে গ্র্যান্ড জুরিদের মতামতের প্রতিফলন ঘটানোটাও জরুরি বলে আমি মনে করি। উন্নত গণতান্ত্রিক বিশ্বে জুরি ব্যবস্তা ক্রমশ প্রাধান্য পাচ্ছে। এতে নাগরিক দায়িত্ব যেমন প্রতিষ্ঠিত হয় তেমনি হয় ভারসাম্য রক্ষা করে সুবিচার প্রতিষ্ঠা। এ প্রসঙ্গে আরেকটি কথা না বললেই নয়। তা হচ্ছে, বাংলাদেশে জমি-জিরাত সম্পর্কিত দেওয়ানি মামলাগুলোর কথা। আমরা দেখেছি, বাংলাদেশে এসব দেওয়ানি মামলা যুগের পর যুগ আদালতে চলতেই থাকে। একটি মামলাকে ‘দাদা-বাপ-পুত্র’ এ রকম তিন পুরুষও চালিয়ে গেছেন কিন্তু মামলার সুরাহা হয়নি এমন নজিরও আমরা দেখেছি। বাংলাদেশের আইনে ফৌজদারি মামলা যতটা গুরুত্ব পায়, দেওয়ানি মামলাগুলো এর চেয়ে কম গুরুত্ব পেয়ে থাকে। এ অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন প্রয়োজন। কারণ, যিনি বিচারপ্রার্থী তিনি সমস্যাটির সমাধান এবং দ্র“ত সুবিচার পাওয়ার জন্যই আইনের আশ্রয় নেন। এক্ষেত্রে তা ঝুলে থাকবে কেন? কেন কালক্ষেপণ একজন নাগরিককে রাখবে মানসিক অশান্তিতে।যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাপটে বলা যায়, এখানে জমিজমা, রিয়েল এস্টেট সম্পর্কিত মামলাগুলো সিভিল ল’র অধীনে গুরুত্বের সঙ্গেই বিবেচিত হয়। বরং অবৈধভাবে দখলদার কেউ ত্রিক্রমিনাল অ্যাক্টে দোষী সাব্যস্ত হতে পারে। ওয়ান-ইলেভেনের পর আমরা ইদানীং একটি কথা প্রায়ই শুনি। তা হচ্ছে সবাই-ই যদি দোষী হয়ে গেল তবে বাংলাদেশে নীতিবান রাজনীতিক ও ব্যবসায়ী কারা? আমার মনে হয়, এ প্রশু যারা তোলেন তারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চান। তাহলে কি আমরা ধরে নেব ১৪ কোটি মানু্ষের রাষ্ট্রে কোনো নীতিবান নেই? অবশ্যই আছেন। আর আছেন বলেই এই প্রজন্ম সোনালি সূর্যের স্বপ্ন দেখে। এখনো মানুষ প্রত্যয় নিয়ে বলে, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার। অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় মানুষ। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, দুর্নীতিতে বাংলাদেশ বারবার চ্যা¤িক্সয়ন হওয়ার পরও দেশের শাসকশ্রেণী বিষয়টিকে মোটেও গুরুত্ব দেয়নি। দখলের মাত্রা এত চরমে পৌঁছেছিল, এক সময় এই রাষ্ট্রটিকেই কেউ কেউ নিজেদের নামে লিখিয়ে নেয় কি-না তা নিয়ে শংকা দেখা দিয়েছিল। রাস্তা বন্ধ করে যারা ক্রিকেট খেলে উল্লাস নৃত্য করেছিল, কিংবা যারা ট্রাক তুলে দিয়েছিল গণমানুষের ওপর এরা কোন শ্রেণীর মানসিকতা পোষণ করতো তা দিনে দিনে অনেক খোলসা হয়েছে। জরুরি কথা একটাই, রাষ্ট্রে যদি সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হয় তবেই দুর্নীতি সিংহভাগ কমে যেতে বাধ্য। আর তা হতে হবে যে কোনো রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে। পৃথিবীর দেশে দেশে জুলুমকারী জালেমরা আছে। কিন্তু বিশ্বের আপামর মানুষই শান্তিকামী। অধিকাংশ মানুষই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার। তা প্রমাণিত হয়েছে, এখনো হচ্ছে দেশে দেশে, যুগে যুগে।-------------------------------------------------------------------------------দৈনিক সমকাল। ঢাকা। ৪ মার্চ ২০০৮ মংগলবার প্রকাশিত